‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই। তা প্রকাশ করতে যদি লজ্জাবোধ হয়, তবে সে ধরনের চিন্তা না করাই বোধ হয় ভাল।’ -- প্রাচীন গ্রীক কবি ইউরিপিডিস (৪৮০-৪০৬ খ্রীঃ পূঃ)
Tuesday, April 29, 2008
# যে ডায়েরীটা লেখা হবে না আর...(০০)
যে ডায়েরীটা লেখা হবে না আর...(০০)
[লেখকের ভণিতা:
কিছু কথা থাকে গোপন, কিছু কথা একান্ত ব্যক্তিগত, যা সর্বসমক্ষে প্রকাশের নয়। বিখ্যাতদের এরকম অজ্ঞাত কথাও কালের দরজা পেরিয়ে হঠাৎ বিখ্যাত হয়ে ওঠে। কিন্তু অখ্যাতদের সে রকম কথা কি গ্রাহ্য করি আমরা ? না কি খুঁজে দেখি ?
এটা একটা সত্যিকারের ডায়েরী। অথবা প্রিয়তমাকে লেখা ধারাবাহিক পত্রগুচ্ছ বা সমার্থে পত্রপঞ্জিও বলা যায়, ডায়েরীতে আঁকা। সেকালে যক্ষের বিখ্যাত আকুতিগুলো বয়ে নিয়েছিলো তার মানবিক মেঘ, মেঘদূত হয়ে। আর একালে...?
অনুভবের স্পন্দন না পেলে কখনোই উপলব্ধির পূর্ণতা আসে না। আর এই অনিবার্য ব্যর্থতাই এমন একটা শুভ্র শুদ্ধ অনুভূতিকে সহসাই খাটো করে দিতে পারে অনায়াসে অজান্তে। তাই ভালোবেসে যারা প্রণয়-যন্ত্রণায় কখনো ছটফট করেন নি তাদের হয়তো এটা না পড়লেও চলবে। কিন্তু এটা সবাই মানবেন যে, ভালোবাসা, সংজ্ঞাহীন এক নীলাভ-কষ্টের নাম। এই ভালোবাসার অমিয়-গরলে ডুবে ভেঙে গুঁড়িয়ে যাওয়া চিরায়ত এক প্রেমিক মনের শাশ্বত আকুতি এখানে অক্ষরে অক্ষরে নীল হয়ে আছে। এ নীল শুধু কি নীল? তা নয়। রক্ত-মাংশ ভেদ করে গভীর গোপন থেকে ওঠে আসা তেতে ওঠা সপ্তবর্ণা নীল!
কোত্থেকে জানবো আমরা, ভালোবাসা প্রেমিককে সত্যিই নীলকণ্ঠ করে কী না ? মীর তকী মীর, জালালুদ্দীন রুমী, হাফিজ, মীর্জা গালীব বা ওমর খৈয়ামের মতো দিওয়ানা শায়েরী যার শতচ্ছিন্ন জগতে শর্তহীন আশ্রয় হয়ে যায়, বস্তুগত শেকড়ের আশ্রয় তাকে কী-ই-বা দিতে পারে ?
ডায়েরীটা যার আয়ত্তে এখন এবং যাকে উদ্দেশ্য করেই এটা লেখা, তিনি যে কোন্ বিশ্বাসে এটা আমার হাতে তুলে দিলেন, জানি না। তবে তা যোগ্য পাঠকের সামনে বস্তুনিষ্ঠভাবে যে অকপট স্বচ্ছতায় হুবহু প্রকাশের চেষ্টা করেছি, এর সবটুকু ঔদার্য্য ও কৃতিত্বও তাঁরই। তাঁর এই সাহসী ভূমিকার জন্য যুগপৎ বিস্ময় ও অভিনন্দন রইলো। তবে হাঁ, আশ্চর্যজনকভাবে এই একান্ত ডায়েরী লেখকের সম্মতিও রয়েছে এখানে।
স্বাক্ষরিত প্রতিটা পত্রপঞ্জির শেষে শুধু প্রথমটাতে ০১ এপ্রিল ১৯৯৩ থাকলেও পরবর্তী কোনটাতেই সন তারিখ উল্লেখ নেই। তবে ওই বছরের শেষার্ধেই ডায়েরীটা যে তার সঠিক গন্তব্যে পৌঁছেছিলো এটা নিশ্চিৎ। কিন্তু যে প্রশ্নটা শেষ পর্যন্ত তাড়া করবে আমাদের, তার উত্তরে শুধু এটুকুই বলবো- প্রেমের স্বার্থকতা মিলনে, পূর্ণতা বিরহে ; তবু প্রেমটাই সত্যি। এর বেশি কিছু থাকলে তা সহৃদয় পাঠকের জন্যই তোলা রইলো।
আসুন আমরা এবার ডায়েরীতে প্রবেশ করি...
--- লেখক।]
চলবে...
প্রথম পর্ব (০১):
R_d_B
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment