Monday, May 26, 2008

# অতৃপ্ত কাকাত্মা (যৌগাণুগল্প)








অতৃপ্ত কাকাত্মা (যৌগাণুগল্প)

-রণদীপম বসু

[ইহা একটি কাল্পনিক যৌগাণুগল্প। ইহাতে সৃষ্ট চরিত্রগুলিও তাই সন্দেহাতীতভাবেই কাল্পনিক। তবুও কেউ যদি অতিকল্পনার কারণে নিজের সহিত কোনরূপ সামঞ্জস্য খুঁজিয়া বাহির করেন, উহা সংস্লিষ্ট পাঠকের ভয়ঙ্কর সৃজনশীলতা বলিয়া গন্য হইবে। সেই ক্ষেত্রে চরিত্রানুগ নামগুলির প্রতি লেখকের পক্ষ হইতে সবিশেষ কৃতজ্ঞতা জানাইয়া রাখা হইল।]


কা...কা...।
মুখোমুখি ফ্র্যাটের কার্ণিশ থেকে এক লাফে জানলাটায় এসে বসলো কাকটা। কা..কা..। সাংঘাতিক ব্যাপার তো ! দুটো বিষয় নতুন করে ভাবিয়ে তুললো বিপ্লবকে। প্রথমত আবর্জনায় ঘাটতি না থাকলেও গাছপালাহীন আধুনিক এ শহরে কোথাও কাক নেই। দ্বিতীয়ত অন্ত্যজ গোষ্ঠির একটা পাখি কী করে এতোটা দুঃসাহসী হয়ে মানুষের মুখোমুখি হতে পারে ? তিনি কাকটাকে তাড়া করলেন না।

প্লেটোর দর্শনে বিশ্বাসী এ সময়ের দুর্ধর্ষ ব্লগার বিপ্লব রহমানের মনোযোগটা সচল নেট থেকে সরে এলো। গভীর অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে কাকটাকে পর্যবেক্ষণ করছেন। হঠাৎ যেন কুয়াশাময় একটা পর্দা সরে গেলো। তিনি কাকের ভাষা বুঝতে পারছেন !
এটা কি ঠিক করলেন বিপ্লব ভাই ?
কী ঠিক করলাম না ?
আপনারা সচল নেট থেকে কবি-সাহিত্যিকদের খেদিয়ে দিলেন !
পারলাম আর কই ! ওই পিছলা লীলেন আর বসুটাকে... ; কিন্তু তোমাকে তো... ?
আমি তো কবিতা ছেড়ে জেনগল্পের ভাষান্তর ধরেছিলাম !
মানে আপনি মুজিব ভাই ! স্লামালিকুম ! আরে ওখানে কেন ? আসেন আসেন, ভেতরে এসে বসেন.. ?
হাক্ হাক্ হাক্ !
কী ব্যাপার, হাসছেন নাকি ?
হাসছি না তো, কাঁদছি।
কেন ?
কাকের শরীর নিয়ে কি আর...
ও হাঁ, তাইতো ! আপনার এই অবস্থা কেন ?
অতৃপ্ত আত্মারা স্বর্গ বা নরকে ঠাঁই না পেলে কাক হয়ে ঘুরতে থাকে।
মানে ?
নরকের দরজাতে সন্যাসীকে যেভাবে প্যাদানো হচ্ছে, তা দেখেই সোজা ফিরে এলাম।
হু, কোথায় যেন পড়েছিলাম এরকম কাক হয়ে যাওয়ার একটা বিষয়। কিন্তু কই, আপনার কোন আত্মহত্যার খবর তো পাই নাই !
ওই লীলেন আর হিমুটাই চেপে রেখেছে ! আরেকবার এসে নেই সচলে, দেখাবো মজাটা..
হা হা হা !

ঝাঁকি খেয়ে ঘুমের রেশটা কেটে গেলো। মনিটরে চোখ পড়তেই সচকিত হয়ে ওঠলেন ! আরে, আবারো অতিথি লেখকে সয়লাব সব ! সবকটাই কি কবি আর সাহিত্যিক নাকি !
টেনে নিলেন কীবোর্ডটা। পৃথিবীর সমস্ত শব্দ চাপা পড়ে যাচ্ছে কীবোর্ডের খটাখট শব্দঝড়ে !

(২৬/০৫/২০০৮)
R_d_B

No comments: