| কে যায় চিড়িয়াখানায় !
-রণদীপম বসু
…
মানুষ চিড়িয়াখানায় যায় কেন ? এর একটা কারণ হতে পারে, যখনি মানুষ হিসেবে নিজের আত্মবিশ্বাসে টান পড়ে যায়, তখনি ছুট লাগায় চিড়িয়াখানার দিকে ! মানুষ হিসেবে নিজের অস্তিত্বটাকে যত দ্রুত সম্ভব ঝালাই করে নেয়ার তাগিদে। কী হয় সেখানে গিয়ে ? এর অন্যতম উদ্দেশ্য হতে পারে শ্রেষ্ঠ জীব হিসেবে মানুষের আধিপত্যের কিছু নমুনা পর্যবেক্ষণ করে নিজেকে আশ্বস্ত করা। কী সেই নমুনা ? গায়ে-গতরে যত বলবানই হোক, মানুষের হিংস্র বুদ্ধির সাথে কুলিয়ে না উঠা প্রকৃতি জননীর সহজ সরল বোকাসোকা প্রাণীগুলোর বন্দীদশা। যা কিনা সুসভ্য মানুষ কর্তৃক অত্যন্ত সফলভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে সৃজনশীল দক্ষতার সাথে। এই দুর্ভাগা বন্দী প্রাণীগুলোকে কেন মানুষ চিড়িয়া নাম দিলো তা নতুন করে আবিষ্কারের আনন্দে এদেরকে অমানবিক প্রক্রিয়ায় উত্যক্ত করার মধ্য দিয়ে নিজের শ্রেষ্ঠত্ব জাহির করতে। নইলে আর মানুষ হলাম কেন আমরা !
এই একই প্রক্রিয়ার ধারাবাহিকতায় আমাকেও যেতে হলো আপাত অবুঝ সন্তানকে সাথে নিয়ে পূর্বপুরুষ হিসেবে নিজের দায় ঘুচাতে। তুমিও মনুষ্য সন্তান, এটা উত্তরাধিকারীকে বুঝিয়ে দিতে হবে না ! সাথে নতুন কেনা Canon PowerShot SX120 IS ক্যামেরার জারিজুরিগুলো আয়ত্ত করে নেয়ার একটা উপায়ও হয়ে গেলো !
সত্যি বলতে কি, চিড়িয়াখানায় গেলে আসলেই চিড়িয়ার অভাব হয় না। তবে আমার দুই-মেগাপিক্সেলে যে সমস্যাটা অনুভব করিনি কখনো, এই প্রথম বুঝতে পারলাম যখন তখন ক্যামেরায় ‘ব্যাটারি লো’ সিগনাল কতোটা বিরক্তিকর হতে পারে। তাই বাধ্য হয়ে আসল চিড়িয়াগুলোর ছবি ধারণের বদলে সেই দুর্ভাগা নিরপরাধী বন্দী প্রাণীগুলোকেই যত্ন করে ক্যামেরাবন্দী করার চেষ্টা করলাম। কারণ ফটোগ্রাফি শেখা হয়নি কখনো আমার। তাই দেখার দৃষ্টিটাকে শুধু আলোকযন্ত্রের লেন্সের মধ্য দিয়ে সূত্রহীন চারিয়ে দেয়ার চেষ্টাটুকুই করে যাই।
অতএব এই প্রচেষ্টাকে ফটোগ্রাফি ভাবা সবার জন্যেই অবিচার হবে। কবিতার দৃষ্টিতে না দেখে গদ্যচোখেই দেখার আমন্ত্রণ রইলো।
…
[sachalayatan]
…
No comments:
Post a Comment