Friday, September 2, 2011

| ঘড়ায়-ভরা উৎবচন…|২৬১-২৭০|

 .
| ঘড়ায়-ভরা উৎবচন…|২৬১-২৭০|
রণদীপম বসু

(২৬১)
মানুষ তথাকথিত ঈশ্বর সম্পর্কে যা বলে
তা হচ্ছে মানুষের সৃষ্ট কল্পনা-গাঁথা; কারণ
অর্থহীন ঈশ্বর-জ্ঞান মানুষ হওয়ার জন্য অনিবার্য নয়।
.
(২৬২)
ঈশ্বর হচ্ছেন সেই অপ্রমাণিত সত্তা
যার ক্ষমতার উৎস মানুষের অরাজক অজ্ঞতা।
 .
(২৬৩)
এবং ঈশ্বর হলো সেই অদৃশ্য পণ্য,
যে লেনদেনে পুরোটাই বিক্রেতার লাভ;
ক্রেতার ভাগে শূন্য।

 .
(২৬৪)
ধর্ম ও ধর্মগ্রন্থের মধ্যে পার্থক্যটা হলো-
ধর্মগ্রন্থ হচ্ছে মুখোশ, ধর্ম হচ্ছে বাস্তবতা।
 .
(২৬৫)
নিত্য প্রবহমান স্থির সত্যকে অনুসন্ধানই হলো দর্শনের লক্ষ্য;
বিজ্ঞানের কাজ হচ্ছে এই সত্যকে নির্ণয় এবং
তার কার্য-কারণ সত্তাকে ইন্দ্রীয়গ্রাহ্য বস্তুময় করে তোলা।
 .
(২৬৬)
ধর্মগ্রন্থ দিয়ে বিজ্ঞানের সত্যাসত্য নির্ধারণ করা যায় না.
এটা ধূর্ত মতলববাজ আর পাগলের কাজ;
বরং বিজ্ঞানই পারে ধর্মগ্রন্থের যৌক্তিকতা বিশ্লেষণ করতে।
 .
(২৬৭)
প্রত্যেক মানুষই নিজের মধ্যে একধরনের মৌলবাদ লালন করে যায়।
নিজের মধ্যের এই মৌলবাদিতাকে যিনি আবিষ্কার করতে জানেন
তিনি আর মৌলবাদী থাকেন না। কারণ
সত্য হচ্ছে নিত্য-প্রবহমান স্থিরতা।
 .
(২৬৮)
দর্শনের বিমূর্ত ঘরের দরজাটাকে খুলতে হয় যুক্তির চাবি দিয়ে;
মৌলবাদে যুক্তি থাকে না বলে
সে দরজাটা ভেঙে ফেলতে চায় তার যুক্তিহীন পাশবিকতা দিয়ে।
.
(২৬৯)
ন্যায়বোধ হচ্ছে সেই আপেক্ষিক চলক, যা
স্থান কাল পাত্র ও অবস্থা ভেদে পরিবর্তিত হয়।
 .
(২৭০)
ক্ষুধা হচ্ছে মানুষের আদি ও অকৃত্রিম অভিজ্ঞতা, যা মানুষ গোপন করতে চায় না।
আর ক্ষুধার্ততা হচ্ছে সেই আদিম প্রবৃত্তি
যা মানুষ চাইলেও গোপন করতে পারে না।
 .

No comments: