ঢাকের বাদ্য
রণদীপম বসু
…
কান পাতলেই ঢাকের বাদ্য শুনি আজো-
শৈশবের নিভৃত সুদূর থেকে ভেসে আসা অদ্ভূত হুল্লোড়,
শাপলাদিঘির ঝুপঝাপ, ভেঁপুর পুঁ-পাঁ, উনুনের ভাঁপে পোড়া
জাদুময় ঘ্রাণ, আর শঙ্খচিলের চমকে ওঠা চিৎকারে চাপা পড়া
মিনুদি’র আশ্চর্য দীর্ঘশ্বাস!
মাঝে মাঝে অচেনা শব্দ নাকি ভেসে যেতো রাণুদের পুরনো ভিটায়,
ঝিম লাগা দুপুরের নৈঃশব্দ ভেঙে তেতুলের পুরুষ্ট ডালে চড়ে
পরপর ঝাঁকি মেরে নেমে দেখি- ঝরে পড়া ঝিরঝিরে পাতাই শুধু!
মুখ ভরা লালা নিয়ে তখনো কি জানতাম, যতোই টসটসে হোক
ঝাঁকালেই বোঁটার বন্ধনে বাঁধা ঝরে না তেঁতুল!
অভিন্ন সীমানায় থাকা ফলবতী গাছটাই ছিলো
অর্পাদের হাঁড়গিলে খুড়োটার সাথে দু’বাড়ির নিত্য বিরোধ।
ডবকা হওয়া ইয়া বড় আতাগুলো সিঁদুররাঙা হলেই
ভীষণ প্রতীক্ষা আর হতঃশ্বাসে দেখে গেছি-
ছোট-বড়ো বাদুড়েরা খেয়ে গেছে একে একে সব!
অতঃপর থেমে যাওয়া ঢাকের শব্দের মতোই
কোনো এক বৈশাখে জেনে গেছি- মেয়েরাও এমনই হয়-
নিটোল স্পন্দনে এলে বোঁটা থেকে আলতো করে তুলে নিতে হয়!
প্রতীক্ষার চৈতি হাওয়ায় নারীরা চলে যায় অন্যের দখল…
(০১ বৈশাখ ১৪২৩)
No comments:
Post a Comment