‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই। তা প্রকাশ করতে যদি লজ্জাবোধ হয়, তবে সে ধরনের চিন্তা না করাই বোধ হয় ভাল।’ -- প্রাচীন গ্রীক কবি ইউরিপিডিস (৪৮০-৪০৬ খ্রীঃ পূঃ)
Monday, March 17, 2008
# তিন দশে তেরো -০২ (শিশুতোষ ছড়াগুচ্ছ)
তিন দশে তেরো
- রণদীপম বসু
আবিষ্কার
হাত থেকে তার ফস্কে গেলো
জগটা ছিলো কাচের
ঝনঝনিয়ে ভাঙলো কি তা?
ভাঙলো কেমোন ধাঁচের ?
এক দুই তিন বারো তেরো
গুনে গুনেই সারা
হঠাৎ খোকার বিজ্ঞানী মন
হলো পাগল পারা।
একটা কাচের পাত্র যদি
উপর থেকে পড়ে
টুকরো ক’টা হবে সেটা
বুঝবে কেমন করে !
নিশ্চয় তা ঠিক
ভেতরে তার সূত্র আছে
ভাবছে দিগ্বিদিক।
হলে গবেষণার শুরু
উচ্চতাটা নিচ্ছে মেপে
পাত্র কেমোন পুরু
আবিষ্কারের নেশায় খোকার
বুকটা দুরু দুরু।
খাতা কলম পাল্লা পাথর
গজের ফিতা ক্যালকুলেটর
ঘরের যত বাসন কোসন
সব হয়েছে জড়ো
ঝনাৎ ঝনাৎ ঠুরুম ঠাশ
দরজা দেয়াল টেবিল ব্রাশ
কাঁপছে থরোথরো।
অফিস থেকে ফিরেইতো মার
চক্ষু ছানাবড়া !
‘পেয়েছি মা’- বলেই খোকা
উচ্ছ্বাসে কড়কড়া-
‘সূত্রটা না- পানির মতো
এক্কেবারেই সোজা
টুকরো হবে তিনটে মোটে
দু’হাত উপর যদি ছোটে
বয়ামটাও এক কেজি আর
মুখ যদি হয় বোজা !
কিন্তু দু’গজ উপর থেকে
ডিশটা যদি ছাড়ো
চিৎ হয়ে তা পড়লে ঠিকই
টুকরো হবে বারো !
আরো উপর গেলেই জানো
সূত্রটা গোলমেলে !
তবে,
হিসেব এটাও বের হবে ঠিক
পাত্র আরো পেলে। #
মুড়িট্টিন্রে ভাঙ্
সিলট্ থাকি উঠ্ছোইন্ ভাইছাব
বিয়ানী বাজার্রো গাড়িত্
‘বাজার থাকি মুরুগ আনাও’-
ফোন র্কছোইন বাড়িত্।
মজাইল্ গুয়াত্ জর্দা দিছোইন্
ডবল পানোর খিলি
চউখ্ মুঞ্জিয়া ভাবোইন্ ভাইছাব
ইবার, যাইবানি সিসিলি।
শ্যাওলা ফেরিত্ যাইবার আগৌ
চাক্কির গেছে ফাম
মাদান্ গিয়া হাইঞ্জাখালৎ
লাগাইছোইন্ গ্যাঞ্জাম-
অউ মুড়িট্টিনরে ভাঙ;
বৌর্য় আতোর মুরুগ খাইতাম
করছিলাম ইঞ্জাম
উল্টাসিদা জিল্লতি অউ
মুড়িট্টিনরে ভাঙ।
[সিলেটের আঞ্চলিক ছড়া]
লেজ
চোঙ্গা খেকে বের করালেই
লেজ যদি হয় বাঁকা
বুঝতে হবে কুকুর মশাই
সুস্থ সবল পাকা!
গুঁতো দিয়েই দেখতে পারো
কিসের জেট বিমান
ঝড়ের বেগে চালায় কেমন
শিকার অভিযান !
তবে-
লেজটা যদি সোজাই থাকে ?
বিপদ সেখানেই,
নজর কিন্তু সোজা সিটি-
করপোরেশানেই !
এন্টির্যাবিস্ ইনজেকশানের
চৌদ্দ ফোঁড়া খে’-
নাভীর নীচে এই অনাচার
মানতে পারে কে ?
তাই বলি কি
সোজা থাকা ভালো ঠিকই,
কিন্তু থাকে কোনটা সোজা ?
চলন সোজা বলন সোজা
দুষ্টুমীটার ফলন সোজা
লম্বা সরল খাম্বা সোজা
দামড়াগুলোর হাম্বা সোজা।
সোজা সোজা যতোই সোজা
সরল অংকের সোজা পথে
মাথাটা ভাই ফাঁকা,
ভালো নয় কি সব কুকুরের
লেজটা থাকুক বাঁকা ? #
প্রশ্ন
প্রান্ত সোনা প্রশ্ন করে
প্রাণীর প্রাণটা
কই থাকে
আকাশের ওই মুখটি কোথায়
মেঘের ভারে
যে ডাকে ?
পড়াটা যে রাখে মনে
ছাত্র ভালো
তাকেই কয়
ধন্ধ লাগে প্রশ্ন শুনে
মনটা তবে
কোথায় রয় ?
অনেক কষ্ট পেলেই যদি
বুকটা ভারী
হয় যাদের
ওজন করে যায় কি বলা
পরিমাণ কী
হয় তাদের ?
সবাই নাকি স্বপ্ন দেখে
স্বপ্ন কেন
শোনে না
জন্ম থেকে অন্ধ যে জন
স্বপ্ন কি সে
বুনে না ?
হরেক প্রশ্ন দেয় যে উঁকি
কি জানি কী
জবাব তার
ভুল করে যে সত্যি বলে
ভুলটাই কি
স্বভাব তার ? #
বাদলা দিনে
স্রোতের টানে যায় ভেসে যায়
খোকার প্রিয় নৌকা ফুল
ঝম ঝম ঝম বাদলা দিনে
কে হারালো কানের দুল !
আলের পানি চালের পানি
খালের পানি একাকার
শন শন শন বাতাস ডাকে
আকাশ ডাকে কড়াৎকার।
ভাসার তোড়ে মনটা ভাসে
আরো ভাসে কদম ফুল
খুকুমনির চোখ ভেসে যায়
ভেসে গেছে বৌপুতুল ! #
For the images,Nurjahan Chaklader and thankfull to-
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment