‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই। তা প্রকাশ করতে যদি লজ্জাবোধ হয়, তবে সে ধরনের চিন্তা না করাই বোধ হয় ভাল।’ -- প্রাচীন গ্রীক কবি ইউরিপিডিস (৪৮০-৪০৬ খ্রীঃ পূঃ)
Tuesday, June 17, 2008
# জলের অক্ষরে- ০৫ (কবিতাগুচ্ছ)
জলের অক্ষরে- ০৫ (কবিতাগুচ্ছ)
রণদীপম বসু
ভাঙতে ভাঙতে
বিমূর্ত শব্দগুচ্ছের পালক খুঁজতে বেরিয়েছে
গুটিকয় স্বজনের চোখ।
সমস্যা হলো শঙ্খের সাদার মতো
পৃথিবীর ধূল-জমায় লেপ্টে থাকা বুক
সমুদ্রকে ধুইয়ে দিতে বললেই
দু’কদম পিছিয়ে গিয়ে সমুদ্র বলে কিনা
কবি আর কথক থেকে বিচ্ছিন্ন সে আগেই,
শুধু শুধু বিব্রত কেন ?
দু’হাতে পাথর ভাঙতে ভাঙতে শেষে
সমুদ্রেই ডুব দিলো ওরা।
বাকি যারা জন্মান্ধ ছিলো
পৃথিবীর দায় দেনা মওকুফ হওয়ায়
পাহাড়ের নতজানু ইচ্ছাকেও দেখলো না কেউ,
বৃক্ষ আর মানুষের অভিন্ন বিভেদ তলের
ভয়ানক শূন্যতায় পৌঁছেই
অনন্তের টিকলি পরিয়ে ফিরে এলো ওরাও।
বাতাসের ইচ্ছেকে অবজ্ঞা করে করে
আলোর পাখিরা আজো পথ হারায়
পলক ও পালকহীন।
(২৯/০৫/২০০৮)
(R_d_B)
সুখের কাব্য
অনুল্লেখ্য নুনের কোন শ্বেতপত্র হয় না,
অনিবার্য উপস্থিতি না হলেই বরং উল্লেখযোগ্য হয়ে ওঠে তা।
এর দৃশ্যমানতা কোথায় ! মাছ মাংস সব্জি
নিদেন মসলার আড়ালে চোখ কি জিহ্বার সম্পূরক হয় ?
নুনের মতো দুঃখ নিয়েও কাব্য করার কিছু নেই।
তার চে’ সুখই ভালো ; একটা স্বপ্ন স্বপ্ন ভাব,
হলুদ ক্যানভাসে ফুটিয়ে তোলা মাদকীয় শব্দসম্ভার।
গোপন অতলে খোঁজা কষ্ট আর সমৃদ্ধির চেয়ে
গোটা সমুদ্রটাই একটানে এঁকে নেয়া সহজ নয় কি ?
দীর্ঘশ্বাস চাপা থাক মেঘেদের কাছে। জল খুঁড়ে খুঁড়ে
জলের ব্যাঘাত নাই বা হলো।
দুঃখ নিয়ে কাব্য করার কিছু নেই,
এবারের মতো কবিতা না হয় কাঁদলোই না আর।
(১৭/০৬/২০০৮)
(R_d_B)
ভুলতে ভুলতে
শেকড়সুদ্ধই উপড়ে ফেলেছিলাম,
কোত্থেকে এসেছো আবার !
তবে কি ছিন্নমস্তা শেকড়ের গান
নৈঃশব্দেই বেজে যায় আজীবন ?
মাটির জরায়ু জুড়ে বিষাদ শূন্যতা, অবয়বহীন
তবু হৃদয়ের ঘুমজলে ঘিরে থাকা পিপাসার মুখ
অবিকল তোমার আকার !
ভুলতে ভুলতে ভুলেই তো আছি ;
ভুলতে যে চেয়েছি খুব,
হয়তো সে চাওয়াটাই ভুলিনি শুধু।
তা বলে তোমার কি মৃত্যুও নেই !
(২০/০৭/২০০৮)
[sachalayatan]
দৃশ্যকম্পন
আকস্মিক কম্পনে দুলে ওঠলেই
ভূমিকম্প ভূমিকম্প বলে চিৎকার জুড়ে দেয় সব।
আমি তো বিযুক্ত নই মাটিবর্তী এইসব জলাশয় থেকে !
স্থিত বুকে দুলি, আর দুলতেই থাকি...
তুমি আর স্রোতবতী শরীর তোমার
পাশ দিয়ে অকস্মাৎ হেঁটে যায় যখন
নীরব পৃথিবী জুড়ে
অজস্র ভাঙনের এতো যে পতন স্বর
অথচ কী সুনসান সব !
থরথর থরথর শুধু কি আমিই কাঁপি ?
অহল্যা-প্রকৃতি বুঝি শেষমেশ
হেরে যায় তোমার কাছেই !
অশান্ত জলাশয় বুক, তার চে’
তুমিহীন পৃথিবীটাই ভালো নয় কি ফের ?
(২৮/০৭/২০০৮)
প্রথম চুম্বনের দাগ
প্রথম চুম্বনের দাগ মুছে না
শ্যাম্পু সাবান সোডা ঘষে ঘষে
চামড়ার পলেস্তা খসে ঠোঁট দু’টো হয়ে গেছে
ভেঙ্গুরের খাদ
অদৃশ্য উল্কির বিভা, মাংশের গভীরে আঁকে
লাল লাল টক টক মাংশের ক্ষত
কিছুতেই যায় না মোছা প্রথম চুম্বনের দাগ
মানুষের ঠোঁটে রাখা প্রথম বিষাদ
জলের স্পন্দন পেলে
নিমেষে ফোটায় ঠোঁটে রক্ত-রাঙা ফুল
কেউ কি মুছতে পারে প্রথম চুম্বনের দাগ
আমার প্রথম দাগ তোমার ঠোঁটে
হয়ে গেছে দ্বিতীয় তৃতীয় কিংবা
চতুর্থ পঞ্চম
আর
প্রথমটা রেখেছো তুমি অন্যের দখল !
(২৫/০৮/২০০৮)
[khabor.com]
[amarblog]
[somewherein]
[pechali]
[sa7rong]
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment