Thursday, September 25, 2008

@ আমার মূর্খতা শুধরে দিতে জুবায়ের ভাই কি আসবেন ?







আমার মূর্খতা শুধরে দিতে জুবায়ের ভাই কি আসবেন ?
রণদীপম বসু


| রণদীপম বসু | সোম, ২০০৮-০৯-০১ ০২:৫৬

ইদানিং কারো কোনো অসুস্থতার খবর পেলেই ভীত হয়ে পড়ি খুব ! আমি জানি আমার এই ভীতি অমূলক। জুবায়ের ভাইয়ের সুস্থতার জন্য আমার সমস্ত শুভকামনা উন্মুক্ত রইলো। এবং তখনি স্বস্তি পাবো, যখন সচলের শীর্ষে দেখবো সেই প্রিয় বাক্যাংশটুকু-
'লিখেছেন মুহাম্মদ জুবায়ের'।
[নামের বানান ভুল করলাম কি ? তাহলেও ক্ষমা যেন পাই জুবায়ের ভাইয়ের পোস্টের মাধ্যমে]

প্রতিমুহূর্তের জন্য শুভ কামনা।


সচলের অত্যন্ত দায়িত্বশীল একজন ব্লগার তানভীর। ‘জুবায়ের ভাইয়ের অসুস্থতা (সর্বশেষ আপডেটসহ)’ শিরোনামে গত ৩১.০৮.২০০৮ তারিখ তাঁর পোস্ট করা চলমান আপডেট লেখাটি পড়েই যতদূর মনে পড়ে প্রথম অসুস্থতার খবর জানলাম। এবং একটা উৎকণ্ঠা বুকে জমা হয়ে গেলো। এ প্রেক্ষিতে আমার করা মন্তব্যটিতে জুবায়ের ভাইয়ের নামের বানান শুদ্ধ করে লিখেও হঠাৎ করে কেন সন্দেহ হলো যে বানান ভুল করলাম ? বাংলা বানানের ব্যাপারে কিছুটা খুঁতখুঁতে স্বভাব থাকা সত্ত্বেও স্ক্রল করে ওই পোস্টের উপরে গিয়ে সন্দেহমুক্ত না হয়ে কেনই বা থার্ড ব্র্যাকেটে সন্দেহযুক্ত বাড়তি মন্তব্য যোগ করেছিলাম, তার উত্তর আমার জানা নেই। অথচ মুহম্মদ লিখতে ঠিকই মুহাম্মদ লিখে বসে আছি ! তবে কি বুকের খুব গভীরে ভেতরে ভেতরে এরকম কোন অনৈতিক তৃষ্ণা লুকানো ছিলো যে, জুবায়ের ভাই সুস্থ হয়ে ওঠে এসে এক অন্যরকম ভালোবাসায় এই পোস্টে হাঁটাহাঁটি করতে করতে আমার মন্তব্যে এসে হোঁচট খাবেন ? খোদ তাঁরই নামের বানানে সন্দেহ ! ফালতু মন্তব্যের জন্য রেগেমেগে মাতৃভাষায় লেখক হিসেবে ভাষা ও বানানের সন্দেহাতীত শুদ্ধ হওয়া নিয়ে বকাঝকা মার্কা একটা বিশাল পোস্ট দিয়ে রাতারাতি আমাকে বিখ্যাত (কুখ্যাতও বিপরীতভাবেই বিখ্যাতও) করে দেবেন ? কিন্তু তিনি তো নিপাট ভদ্রলোকই ছিলেন।

পরে তানভীরের এই পোস্টের আপডেটগুলো বিভিন্ন সময় চেক করার পাশাপাশি মাঝখানে তাঁর শারীরিক উন্নতির খবরে বেশ উল্লসিতও হয়েছিলাম। ফাঁকেঝোঁকে মন্তব্য করে তা প্রকাশও করেছি। কিন্তু অবস্থা ফের ইউটার্ণ নিতেই গত ২২.০৯.২০০৮ এ যে মন্তব্য করলাম, ওখানে কোন্ বোধটা বলবান ছিলো ? আশা, না কি হতাশা ? তা আর বুঝে ওঠা হলো না।

| রণদীপম বসু | সোম, ২০০৮-০৯-২২ ১২:১৪

আমাদের দুর্ভাগ্য যে, না চাইলেও আমাদেরকে মাঝে মাঝেই খুব হতাশার খবরও শুনতে হয়।
এই হতাশার অন্ধকার কাটিয়ে এক মুঠো আলোর তৃষ্ণা বুকে ধরে রাখলাম।


আজ ব্লগে ঢুকেই যে ভয়ঙ্কর সত্যের মুখোমুখি হলাম তা কি মানতে পারলাম আদৌ ? হাহ্ , মানুষের নির্বুদ্ধিতায় সত্যের কী যায় আসে ? সত্য সত্যই। তীক্ষ্ণ, তীব্র, তিক্ত। টলানোর সাধ্যহীন অবিচল পাথরের মতো চাপা সে দেবেই। তবু গতকাল তাঁর কনিষ্ঠ সহোদর ব্লগার আনিস মাহমুদ এর মন্তব্যটা পড়েও কি মানুষের চিরায়ত দুর্মর আশাকে সত্যিই নতজানু করা গেলো ?

| আনিস মাহমুদ [অতিথি] | বুধ, ২০০৮-০৯-২৪ ২১:৪০

এইমাত্র কথা হল ভাইয়ের ঘনিষ্ঠ বন্ধু মিশিগানপ্রবাসী ডাক্তার জাকিরের সাথে। জাকির ভাইকে ধন্যবাদ; সুদূর মিশিগান থেকেও তিনি এখানকার ডাক্তারদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। এর মধ্যে অ্যালেন থেকেও ঘুরে গেছেন একবার। নিজে থেকে পয়সা খরচ করে ফোন করেছেন। যা যা তিনি জানালেন, নিচে তুলে দিচ্ছি:

- ভাইয়ের ফুসফুসে দুটো ক্ষত হয়েছে বলে নিজে থেকে শ্বাস নিতে পারছে না বললেই চলে। এই কারণে তাকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে।

- ফুসফুসের পাশাপাশি এখন কিডনি ও লিভারের সমস্যাও দেখা গেছে। উচ্চশক্তির অ্যান্টিবায়োটিকের কারণেও অবশ্য এমনটি হতে পারে বলে ডাক্তারদের ধারণা। তবে তার শরীরে গুরুতর কোনো সংক্রমণ পাওয়া যায়নি বলে অ্যান্টিবায়োটিক আজ থেকে বন্ধ করে দিয়ে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে, তার কিডনি আর লিভারের অবস্থার উন্নতি হয় কি না দেখার জন্য।

- ভাইয়ের ব্লাড প্রেশার হঠাত্ হঠাত্ কমে যাচ্ছে বলে আজ তার সেই পরীক্ষাও করা হবে।

- উচ্চশক্তির স্টেরয়েড প্রয়োগের কারণে ভাইয়ের রক্তে শর্করা বেড়েছে অস্বাভাবিক মাত্রায়। আগে থেকেই ছিল অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস ছিল। স্টেরয়েডের ফলে এখন তা চূড়ান্ত আকার ধারণ করেছে।

- সব মিলিয়ে বোঝা যায় যে, প্রতিরোধব্যবস্থা আস্তে আস্তে ভেঙে পড়ছে।

আমি চেষ্টা করছি প্রতিবেদকসুলভ নিস্পৃহতা বজায় রাখতে। পারছি কোথায়? বাস্তববুদ্ধি দিয়ে বুঝতে পারছি আশা নেই। মন তো সেটা মানছে না।

মন মানুক আর নাই মানুক, মনে হচ্ছে তৈরি হতেই হবে।


জুবায়ের ভাই আর নেই ! স্তম্ভিত বিস্ময়ে নতজানু হতে হতে এস এম মাহবুব মুর্শেদের একচিলতের অনিবার্য পোস্টে শেষমেশ আমি সেই নামের নিঃসন্দেহ বানানটাই ভুল লিখলাম ? এতো বেশি চর্চিত হয়েও ভুল নামের মন্তব্যে জুবায়ের ভাইয়ের প্রতি নতজানু শ্রদ্ধায় শোকার্ত হয়েছি তো ঠিক, তবু তাঁকে কি ফের অপমানই করলাম ?!

| রণদীপম বসু | বিষ্যুদ, ২০০৮-০৯-২৫ ১৯:০১

হিমুর পোস্টে মন্তব্য করেই এখানে এসেছি।
ঢাকায় এখন সন্ধ্যা সাতটা, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০০৮। ক্যালেন্ডারে যতক্ষণ না এ তারিখ পাল্টাবে, এ মন্তব্যের পর থেকে সচলে আমার সমস্ত অক্ষরগুলো নতজানু হয়ে জোবায়ের ভাইকে শোকার্ত শ্রদ্ধা জানাবে। আর আমার নতুন কোন অবাধ্য অক্ষর এসে যাতে এ নীরবতা ভাঙতে না পারে, আমি লগআউট হয়ে থাকবো।
আমার সমস্ত পোস্টগুলো নতজানু এখন। আমিও।


ক্ষমাহীন এ অপরাধ আমার। জানি না সে কি অজান্তেই হলো, না কি বোধশূন্যতার ঘোরে বিকারগ্রস্ত হয়ে এক অন্তহীন অচেনা আশায় অবচেতনেই চিরতৃষ্ণার্ত হয়ে ওঠেছিলাম ? এমন বেয়াদবি মূর্খতা সইতে না পেরে যদি সত্যি সত্যি চিরশয্যা ছেড়ে উঠে আসেন তিনি, আর বিনম্র ক্ষোভে ঝেড়ে ওঠেন, ‘আপনি কি অন্ধ ! জানেন না, আমি জোবায়ের নই ? মুহম্মদ জুবায়ের !’
অনেকের কাছে সচলায়তনের হেডমাস্টার বলে পরিচিত এই কলমবৃক্ষটিকে তখন প্রাণ ভরে দেখতাম আমি ফের !

আহা, আমার এ মূর্খতাকে শুধরে দিতে তিনি কি আসবেন আর কখনো ? কী হবে আমার ক্ষমাহীন অপরাধের ?
(২৫/০৯/২০০৮)

[sachalayatan]

No comments: