| দুই-মেগাপিক্সেল…| বিশ্ব মর্যাদা দিবস |
রণদীপম বসু
…
০৬-১২-২০০৯ রোববার। মতিঝিল থেকে মিরপুরগামী ডবল-ডেকার বাসে চড়লাম। বাসের দোতলায় জানালার পাশে বসে প্রতি মুহূর্তে নতুন হয়ে ওঠা ঢাকা দেখে দেখে চলছি। ভালোই লাগছিলো। পল্টন পেরিয়ে প্রেসকাব পর্যন্ত যাবার আগেই হঠাৎ জ্যাম। মাথা বের করে সামনে তাকিয়ে জ্যামের মাথা দেখার চেষ্টা করলাম। বুঝা গেলো সুপ্রিম কোর্টের সামনের সেই কদম ফোয়ারা পর্যন্ত গাড়িতে ঠাশা। কোন কারণ খুঁজে পেলাম না। এরই মধ্যে দূর থেকে নজরে এলো, একটা জাকজমকপূর্ণ শোভাযাত্রা বিশাল অজগরের মতো তার মাথা বাঁকিয়ে ঠিক প্রেসকাবের কোণাটাতে রাস্তা ক্রস করছে। সামনে রঙচঙে টমটম বা ঘোড়ার গাড়ি কয়েকটা। এর পেছনেই প্রতিবন্ধী মানুষসহ কতকগুলো হুইল চেয়ার ঠেলছে কজন নারী-পুরুষ, বেশ সুশৃঙ্খল সারিবদ্ধ। তার পেছনে পর্যায়ক্রমে লাইনবদ্ধ মানুষ, ফেস্টুন আর চওড়া ব্যানারের সারি। সাড়াশব্দহীন নিরিবিলি শোভাযাত্রাটা তার লম্বা শরীটা বাঁকিয়ে রাস্তা পেরিয়ে উল্টোমুখী হচ্ছে। প্রতি কূলোয় একেকটা অক্ষর বিন্যাস করে কতকগুলো কুলোর সমন্বয়ে যে লেখাটা প্রদর্শিত হচ্ছে, দূর থেকে তা-ই বুঝা গেলো শুধু- ‘বিশ্ব মর্যাদা দিবস’। (World Dignity Day 2009)
০৬-১২-২০০৯ রোববার। মতিঝিল থেকে মিরপুরগামী ডবল-ডেকার বাসে চড়লাম। বাসের দোতলায় জানালার পাশে বসে প্রতি মুহূর্তে নতুন হয়ে ওঠা ঢাকা দেখে দেখে চলছি। ভালোই লাগছিলো। পল্টন পেরিয়ে প্রেসকাব পর্যন্ত যাবার আগেই হঠাৎ জ্যাম। মাথা বের করে সামনে তাকিয়ে জ্যামের মাথা দেখার চেষ্টা করলাম। বুঝা গেলো সুপ্রিম কোর্টের সামনের সেই কদম ফোয়ারা পর্যন্ত গাড়িতে ঠাশা। কোন কারণ খুঁজে পেলাম না। এরই মধ্যে দূর থেকে নজরে এলো, একটা জাকজমকপূর্ণ শোভাযাত্রা বিশাল অজগরের মতো তার মাথা বাঁকিয়ে ঠিক প্রেসকাবের কোণাটাতে রাস্তা ক্রস করছে। সামনে রঙচঙে টমটম বা ঘোড়ার গাড়ি কয়েকটা। এর পেছনেই প্রতিবন্ধী মানুষসহ কতকগুলো হুইল চেয়ার ঠেলছে কজন নারী-পুরুষ, বেশ সুশৃঙ্খল সারিবদ্ধ। তার পেছনে পর্যায়ক্রমে লাইনবদ্ধ মানুষ, ফেস্টুন আর চওড়া ব্যানারের সারি। সাড়াশব্দহীন নিরিবিলি শোভাযাত্রাটা তার লম্বা শরীটা বাঁকিয়ে রাস্তা পেরিয়ে উল্টোমুখী হচ্ছে। প্রতি কূলোয় একেকটা অক্ষর বিন্যাস করে কতকগুলো কুলোর সমন্বয়ে যে লেখাটা প্রদর্শিত হচ্ছে, দূর থেকে তা-ই বুঝা গেলো শুধু- ‘বিশ্ব মর্যাদা দিবস’। (World Dignity Day 2009)
.
বুঝলাম, শোভাযাত্রাটার পিছু পিছুই হয়তো এবার আমাদের ‘ঘোড়ায় চড়িয়া মর্দ হাঁটিয়া চলিলো’ অবস্থা ঘটতে যাচ্ছে। কিন্তু না, ওটা পার হয়ে যাবার পর আমাদের গাড়ি ফের চলতে শুরু করলো। সামনে আর র্যালি দেখা যাচ্ছে না। অর্থাৎ বাঁ দিকে প্রেসকাবের সামনে জড়ো হয়ে গেছে ওটা। ক্রস করে যেতে যেতে ওদিকের জানলা দিয়ে দুই মেগাপিক্সেলটার সাটার টিপলাম চলতি অবস্থাতেই। থাক না স্মৃতি হয়ে।
.
মূলত এ দিবসটার প্রতিপাদ্য হলো, আমাদের দেশের সুবিধাবঞ্চিত দলিত জনগোষ্ঠি সামাজিকভাবেই মূল জনগোষ্ঠি থেকে বিচ্ছিন্ন। এদেরকে বিচ্ছিন্ন ও অবহেলিত করে রেখেছে আমাদের এই তথাকথিত সভ্য সমাজটাই। আর এই দলিত জনগোষ্ঠির সদস্যরা সবচেয়ে বেশি বৈষম্যের শিকার হয়ে থাকে শিক্ষাক্ষেত্রে। মেধা ও যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও এরা না পায় সুযোগ, না পায় সম্মান। এর ন্যায্যা প্রতিকারের দাবীতেই এই বিশ্ব মর্যাদা দিবস পালন ও শোভাযাত্রার আয়োজন। এ উপলক্ষে জাতীয় জাদুঘরের সামনে থেকে এই শোভাযাত্রাটি বের করে ‘মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন’।
.
মানুষ হিসেবে জন্মে দেশের যোগ্য নাগরিক হয়েও আমাদের এই অদ্ভুত বিকৃত সমাজে দলিত জনগোষ্ঠি কেন বৈষম্যের শিকার হবে ? এটাও তো একপ্রকার বর্ণবাদ ! রেসিজম। তা নির্মূল হওয়া আবশ্যক নয় কি ?
…
…
No comments:
Post a Comment