Saturday, September 25, 2010

| ঘড়ায়-ভরা উৎবচন…|২০১-২১০|

| ঘড়ায়-ভরা উৎবচন…|২০১-২১০|
রণদীপম বসু

(২০১)
যে সত্য প্রকাশ করা যায় না, তার কোন ব্যবহারিক মূল্য নেই।
যার ব্যবহারিক মূল্য থাকে না, তা অর্থহীন অপ্রয়োজনীয়।

(২০২)
যে প্রশ্নের উত্তর জানি বলে আমরা মনে করি, তা নিয়ে কেউ ভাবি না।
শেষ পর্যন্ত উত্তরটা আর জানা হয় না আমাদের;
এবং সবচেয়ে কম জানি সেটাই।

(২০৩)
চিন্তারাজিকে সীমাহীন উন্মুক্ত না-করলে বিজ্ঞান-মনস্ক হওয়া যায় না;
আর মুক্তচিন্তাকে অবরুদ্ধ না করলে প্রচলিত ধার্মিক হওয়া সম্ভব নয়।


(২০৪)
বিজ্ঞান-প্রদত্ত সমস্ত সুবিধা গ্রহণ করেও যখন ধর্মের ধ্বজাধারীরা
বিজ্ঞানের বিরুদ্ধেই যুদ্ধরত হন,
তখন বুঝতে হবে এদের নৈতিকতা ভণ্ডামোতে ভরা।
ভণ্ডামো দিয়ে মানবতার কোন উপকার হয় না।

(২০৫)
মিল বা অমিল কোনোটাই না-থাকা হচ্ছে অলীক-অবস্থা।
চিন্তা হচ্ছে সে-রকম একটা বিষয়, যার
অলীকত্ব ঘোচাতে তাকে দৃশ্যমান করতে হয়।

(২০৬)
ভাষার প্রাণ যেমন কথায় নয় দেহে,
দেহভাষার প্রয়োগ না ঘটলে কথারা হয়ে যায় অর্থহীন নিষ্প্রাণ;
লেখারও দেহভাষা থাকে,
উত্তীর্ণ লেখক সেই দেহটিকে আবিষ্কার করেন।

(২০৭)
ভবিষ্যৎ সমৃদ্ধ করতে গিয়ে অতি হিসেবি যারা
বর্তমানকেই বঞ্চিত করে ফেলেন,
তাদের ভবিষ্যতও এক অধরা কাল্পনিক সত্তা হয়েই থাকে।

(২০৮)
যার কাছে অর্থ নেই, তার অবস্থা শোচনীয়;
যার কাছে অর্থ ছাড়া আর কিছুই নেই, তার অবস্থা আরো শোচনীয়।
কিন্তু মানুষের চূড়ান্ত মোহ মধ্যপন্থায় চলতে অভ্যস্ত নয়।

(২০৯)
কথায় বলে- ‘সব জিনিসের মূল্য আছে, মানুষের দাম নাই।’
কথাটা ভুল; কারণ দাম উঠলেই মানুষ পণ্য হয়ে যায়। এবং
নিজেকে সেরা পণ্য বানাতেই মানুষ একে অন্যের তীব্র প্রতিযোগী।

(২১০)
দুই কান কাটা গেলেই যে মানুষ রাস্তার মাঝখান দিয়ে হাঁটতে পারে,
এটাই নির্লজ্জ হওয়ার সবচেয়ে বড় ক্রেডিট বা সুবিধা।

No comments: