Sunday, May 4, 2008

# যে ডায়েরীটা লেখা হবে না আর...(০৪)







যে ডায়েরীটা লেখা হবে না আর...(০৪)

তারিখ: নেই (অনুমান এপ্রিল,১৯৯৩)


/ দুখ অব ফিরাক কা হমসে সহা নহীঁ জাতা
ফির উসসে জুল্ম য়হ্ হ্যয় কুছ কহা নহীঁ জাতা /

‘ বিরহের জ্বালা আর তো সইতে পারছি না,
আরও যন্ত্রণা এই যে, মুখ ফুটে কিছু বলতেও পারছি না।’


(-মীর তকী মীর-)

আজকের রাতটা তারা ভরা। বিষণ্ন জ্যোৎস্না-রাতটার আকাশের দিকে তাকিয়ে থেকে থেকে মীরের এই শায়েরটার সাথে কখন জানি একাত্ম হয়ে গেলাম ! তোমার জন্যে মনটা কেমোন যেনো হয়ে গেলো, রূপা। ভীষণ কষ্ট ! কি জানি কি করছো এখন তুমি। তুমিও কি এরকম কিছু ভাবছিলে ? নইলে এতো কষ্ট হচ্ছে কেন আমার ? আবারো সেই যুবকের গল্প এসে গেলো !

যুবকটি কতদিন মুখ ফোটে তার যন্ত্রণার কথা কষ্টের কথা বলতে চেয়েছে। কিন্তু মেয়েটি তাকে থামিয়ে দিয়েছে বারে বারে। এতে যে তার কষ্ট আরো বেড়ে যায় বহুগুনে, তা কি মেয়েটি বোঝে না ? মেয়েটির কষ্টের কথাও তো সে শুনতে চেয়েছিলো, জানতে চেয়েছিলো। ভীষণ স্বার্থপর মেয়ে তা-ও জানতে দেয়নি কখনো। তাই তো যুবকের অসহায় চোখ মেয়েটির চোখে চেয়ে থেকে বুঝতে চেয়েছে কেমোন নীল কষ্ট ধারণ করে আছে ঐ বিস্ময়কর নারীমূর্তি !

এই তো সেদিন কি জানি মেয়েটি পূর্ণ দৃষ্টিতে চাইলো যুবকের দিকে, হয়তো অসচেতনভাবেই। কিন্তু যুবকের বুকের ভেতরে কী যেনো গুমরে ওঠলো, ঠেলে বেরিয়ে আসতে চাইলো। মেয়েটি কিছু বুঝলো কি না জানি না। এটা যদি তার নিরেট উদাসীনতাই হয়, তা হলে তো মীর অনেক আগেই বলে গেছেন শায়ের’এ-
‘কুছ খুব নহীঁ ইতনা সতানা ভী কি সূকা
হ্যয় মীর ফকীর, উসকো নহ্ আজার দিয়া কর।’

(এমন করে কাউকে যন্ত্রণা দেয়াটা কি খুব ভালো কাজ ?
মীর এমনিতেই সর্বহারা, তাকে আর কষ্ট দিয়ো না।
)

রবি ঠাকুরও গাইলেন-
‘না বুঝে কারে তুমি ভাসালে আঁখিজলে...’

রূপা, আমার তো আঁখিজল নেই ! কিন্তু আমারও যে কাঁদতে ইচ্ছে করে !


চলবে...

আগের পর্ব (০৩):
পরের পর্ব (০৫):
R_d_B

No comments: