‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই। তা প্রকাশ করতে যদি লজ্জাবোধ হয়, তবে সে ধরনের চিন্তা না করাই বোধ হয় ভাল।’ -- প্রাচীন গ্রীক কবি ইউরিপিডিস (৪৮০-৪০৬ খ্রীঃ পূঃ)
Friday, May 2, 2008
# যে ডায়েরীটা লেখা হবে না আর...(০৩)
যে ডায়েরীটা লেখা হবে না আর...(০৩)
তারিখ: নেই (অনুমান এপ্রিল,১৯৯৩)
রূপা, এই দ্যাখো, কিছু বলতে গেলেই ওই যুবকের গল্প এসে যায়। একদিন সে করলো কি জানো, চুপি চুপি হঠাৎ মেয়েটিকে জড়িয়ে ধরলো ; এঁকে দিলো ভালোবাসার প্রথম চুম্বন ! মেয়েটি কেঁপে ওঠলো কি না জানি না, তবে ভালোবাসার লাল গোলাপ ফোটাতে গিয়ে সে দেখলো, গোলাপ ফুটেছে ঠিকই, কিন্তু তা লাল নয়, যুবকটির ভেতরের মতো গভীর, একেবারে গাঢ় নীল গোলাপ ! অভিশপ্ত যুবক নিজের ভেতর ফেটে পড়লো- এ আমি কী করলাম ! ভালোবাসায় রাঙাতে গিয়ে আমারই মতোন কালো করে দিলাম !
যুবক উদ্ভ্রান্ত তখন। মেয়েটির চোখ চিক চিক করছে বেদনায়। যুবকের বুভুক্ষু বুক, দ্বিধাহীন তীক্ষ্ণ ঠোঁট নামিয়ে আনে মেয়েটির চোখে, যেখানে বেদনার ধারা নদী হয়ে ছুটছে, তীব্র চুমুকে সে শুষে নেয় নিজের ভেতর। কিন্তু মেয়েটির চোখে ওটা শুধু কি বেদনাই ছিলো ? কেউ জানলো না, ওখানে ওই মন্থিত বেদনা থেকে ওঠে আসা অমিয়ের এক শীর্ণ সলাজ স্রোতও ছিলো। মেয়েটিও জানলো না, ওই অমিয়ের আবাহনে ডুব দিয়ে পান করে সতৃষ্ণ সে যুবক কখন যে অমর হয়ে গেলো ! পৃথিবীর সমস্ত মারণাস্ত্র এখন পরাজিত ওই যুবকের কাছে, অমৃত-যৌবনের কাছে।
রূপা, আর কোথাও নয়, শুধু পৃথিবী-রং তোমার চোখের তারায়ই আমার মৃত্যু লেখা হলো। এই মৃত্যু পরোয়ানা নিয়ে আমি ফিরে ফিরে আসবো তোমারই কাছে। তুমি ছাড়া এই অমরত্বের যন্ত্রণার ভার আমি একা বইতে পারবো না আর। তুমিই আমার শক্তির উৎস, বেঁচে থাকার বাসনা, মৃত্যুর শান্তি !
// গুল ও আইনেহ্ কেয়া খুরশীদ ও ম্যহ্ কেয়া
জিধর দেখা তিধর তেরা হী রূ থা //
/ ফুলের দিকে তাকাই, আয়নার দিকে তাকাই,
চন্দ্র সূর্যের দিকে তাকাই। যে দিকে তাকাই,
তোমারই মুখ দেখতে পাই /
(= মীর তকী মীর-এর গজল থেকে =)
চলবে...
আগের পর্ব (০২):
পরের পর্ব (০৪):
R_d_B
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment