‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই। তা প্রকাশ করতে যদি লজ্জাবোধ হয়, তবে সে ধরনের চিন্তা না করাই বোধ হয় ভাল।’ -- প্রাচীন গ্রীক কবি ইউরিপিডিস (৪৮০-৪০৬ খ্রীঃ পূঃ)
Saturday, May 17, 2008
# সচল পেন্সিলে টানা অবাধ্য অক্ষরগুলো...(০১)
সচল পেন্সিলে টানা অবাধ্য অক্ষরগুলো...(০১)
ব্লগিং, কতোটা জরুরি ?
প্রাচীন গ্রীক কবি ইউরিপিডিস (৪৮০-৪০৬ খ্রীঃ পূঃ)-এর চমৎকার একটি উক্তি আছে যা আমি আমার হরপ্পা ব্লগস্পটের নিক বক্তব্য হিসেবে ডিফল্ট করে রেখেছি। উক্তিটি হলো- ‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই। তা প্রকাশ করতে যদি লজ্জাবোধ হয়, তবে সে ধরনের চিন্তা না করাই বোধ হয় ভালো।’
আজ থেকে প্রায় আড়াই হাজার বছর আগের এই চিরায়ত উক্তি যে সব কালেই কতোটা সমকালীন এবং মুক্ত-চিন্তকদের হার না মানা বুকের গভীরে মহাসত্যের অক্ষয় বাণী হিসেবে অধিষ্ঠিত হয়ে আছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। ইউরিপিডিসের এই সত্যবাণীকে সুনিদিষ্টভাবে জেনে বা না জেনেও এই স্বতস্ফূর্ত বোধে উদ্বুদ্ধ হয়েই সম্ভবত আন্তর্জালের ব্লগাররা যার যার অবস্থান থেকে লেখালেখি করে যাচ্ছেন, সৃষ্টি করছেন এবং একই সমান্তরালে ভাবনার বিনিময়ও করছেন। প্রযুক্তির এই ধারাবাহিক উৎকর্ষের সুযোগকে তাই অভূতপূর্ব আশির্বাদ হিসেবে আমরা গ্রহণ করেছি। ‘সচলায়তন’ও নিঃসন্দেহে সেরকম একটি সুযোগ বৈ কি।
‘সুযোগ’ শব্দটিকে যখনই যে প্রেক্ষিতে ব্যবহার করি আমরা, তখনই কান টানলে মাথা আসার মতোই কার্যকারণগত কিছু নীতিমালার বিষয়ও অন্তর্ভূক্ত হয়ে যায় এতে। কে সুযোগ পাবে, কেন পাবে, কীভাবে পাবে, কখন পাবে ইত্যাদি ইত্যাদি। যোগ্য ব্যক্তি তাঁর সহজাত কৌতূহলে এ প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে নেন। ব্লগিং জগতে ব্যক্তি আমি অজ্ঞান-মূঢ় বলেই হয়তো তা থেকে এখনো অন্ধকারে থেকে গেলাম। এখন প্রশ্ন হলো- কেন এই প্রসঙ্গটি এলো ?
কথাটা কি ভুল শোনাবে, যদি বলি- মানুষ আসলে নতুনভাবে কিছুই সৃষ্টি করে না, ব্যক্তিজীবনের অভিজ্ঞতাগুলোকে স্রষ্টার কল্পনা দিয়ে নতুন নতুন বিন্যাসের মাধ্যমে নিজেকেই খোঁজেন শুধু। খোঁজার এই পরিক্রমাকেই আমরা সৃষ্টির আত্মস্তুতিতে গেঁথে আত্মতৃপ্তিতে ভেসে যাই। মানুষের ভাষার স্বাপেক্ষে মহাপ্রকৃতির প্রকাশমুখ নেই বলেই হয়তো আমরা আত্মস্তুতি করেও রেহাই পেয়ে যাচ্ছি সমূহ বিরোধী আশংকা থেকে। সে যাক্, প্রসঙ্গটা এসেছে সচলায়তনে ব্লগ তৈরি হয়েছে অথচ নীড়পাতায় গুটিকয় পোস্টের একসেস না পাওয়ায়। প্রসঙ্গ হয়তো ব্যক্তি পর্যায়ে চলে যাচ্ছে। কিন্তু এটাও তো সত্যি যে, জগতের সমস্ত সৃষ্টিই মূলতঃ ব্যক্তি উদ্ভুত চিন্তার ফসল ! সে ক্ষেত্রে প্রসঙ্গটাকে নিজের পেটেন্ট দাবি করছি না, তবে নমূনা হিসেবে তো আমাকেই আমার টানতে হবে।
সংশ্লিষ্ট নমূনার উদাহরণ হিসেবে ইতোপূর্বের তৈরিকৃত আমার সর্বশেষ ব্লগ-পোস্টের কথাই উল্লেখ করবো। তা হলো ‘অনুলিপি’ শিরোনামের একটি (তথাকথিত) কবিতা। ব্লগ তৈরির সময়কাল ১৭-০৫-২০০৮ শনি ২.৪২। যা আমার ব্লগে আছে, অথচ সচলের নীড়পাতায় নেই। ব্যক্তির চাওয়া না চাওয়াটা এখানে মুখ্য না হলেও আমি যে সচলায়তনের মডারেশন পদ্ধতির পক্ষে, এর সপক্ষে যুক্তিসঙ্গত যে সব কারণ রয়েছে তার ব্যাখ্যা এখানে অপ্রাসঙ্গিক। কিন্তু যা আমাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে, অন্যদিকে লেখকসত্তাকে আহত অভিমানী করে তুলেছে, স্বচ্ছতার প্রয়োজনেই তা জানতে চাওয়া নিশ্চয়ই অযৌক্তিক নয় এবং ব্লগ মডারেটররাও যে দায়বদ্ধতার উর্ধ্বে নন, এটা তাঁরাও বিশ্বাস করেন বলেই আমার ধারণা। সে ক্ষেত্রে আমি কি জানতে পারি-
০১) ব্লগপোস্ট ‘অনুলিপি’ তৈরির পরবর্তি অন্যান্য ব্লগারের আরো পোস্ট নীড়পাতায় প্রজেকশান হলেও ‘অনুলিপি’ হতে পারলো না কেন ? এর অযোগ্যতা কোথায় ?
০২) পোস্ট তৈরির পর নীড়পাতায় প্রকাশের ক্ষেত্রে এমন কোন কারিগরি অপশন রয়েছে কি, যা ব্যবহার বাধ্যতামূলক ? (যেমন সামহোয়ারইন-এ মূলপাতায় প্রকাশের জন্য নির্ধারিত অপশনে অবশ্যই টিক চিহ্ন দিয়ে রাখতে হয়।)
০৩) কারিগরি কোন সমস্যা না হয়ে থাকলে নীড়পাতায় প্রকাশের যোগ্যতা সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কোন নীতিমালা আদৌ আছে কি ? থাকলে তা কীভাবে জানবো ?
০৪) ব্লগে লেখা বা লেখকের যোগ্যতার মানদণ্ড কী ? এবং
০৫) আমার মতো প্রযুক্তি-কানা নবীন(!) ব্লগারদের জন্য সচলের ব্লগ তৈরিতে প্রদর্শিত বিভিন্ন অপশনগুলোর ব্যবহারবিধি জানার কী উপায় রয়েছে ?
পেন্সিল-রেখায় টানা এই ব্লগরব্লগরে যে কেউ আমাকে যা খুশি ঠাউড়াতে পারেন, নির্বোধও বলতে পারেন, তা একান্তই যার যার ভাবনা জগতের ক্রিয়া প্রতিক্রিয়াপ্রসূত। আমি কেবল প্রাচীন গ্রীক কবি ইউরিপিডিসের পূর্বোক্ত উক্তিটাকেই সত্যজ্ঞানে বুকে ধারণ করেছি।
অতএব, আপাতত উদ্ধৃত প্রশ্নগুলোর উত্তর পেলেই হয়তো সেই প্রাসঙ্গিক প্রশ্নটা ব্যাখ্যার সুযোগ তৈরি হতে পারে, যা দিয়ে ব্ক্ষ্যমান লেখাটা শুরু হয়েছিলো- ব্লগিং, কতোটা জরুরি ?
(১৭/০৫/২০০৮)
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment