Saturday, May 17, 2008

# যে ডায়েরীটা লেখা হবে না আর...(১৬)






যে ডায়েরীটা লেখা হবে না আর...(১৬)

তারিখ: নেই (অনুমান এপ্রিল,১৯৯৩)


‘ইবতেদা-এ ইশক মেঁ রোতা হ্যয় কেয়া
আগে আগে দেখিয়ে হোতা হ্যয় কেয়া।’


(সবে তো প্রেমের শুরু, এখনই কাঁদছো ? দেখো ক্রমে ক্রমে কত কী ঘটে আরো।)... মীর তকী মীর।

কান্নাই কি প্রেমের পূর্বরাগ, রূপা ? কতকিছুই তো মনে পড়ে যায় ; ওই যুবকের কথা, তার প্রেমাস্পদের কথা, তাদের কথা। ঐ হেঁয়ালির কান্না কতো অর্থহীনই না ছিলো ! অথচ কী গভীরভাবে সবকিছু ভাসিয়ে দিয়ে গেলো ! ভাসলো এবং ভাসালো। ভাসতে ভাসতে অচেনা কোন দ্বীপের নিঝুম চরে এসে আটকে গেলো, তা কি বুঝলো না ওরা ?

রূপা, যুবকের এই গল্প ভালো লাগবে না তোমার। ভালো লাগার কথা নয়। কারণ তুমি, তোমার মধ্যের ঐ মেয়েটি বড় স্বার্থপর। সে কাঁদতে ভালোবাসে অথচ যুবকটিকে কাঁদতে দিতে চায় না। নিজেকে বিষন্নতায় মুড়ে রেখেও ঐ যুবকের বিষন্নতাকে একদম সহ্য করতে পারে না। নিজের অবাধ্য কান্না ঐ যুবককে দিয়ে বিনিময়ে আশা করে যুবকের উদাত্ত হাসি। কী প্রহসন !

চাওয়া পাওয়া আর দেয়া নেয়ায় এমন বৈষম্য জীইয়ে রেখে কবে কোন্ কালে কোথায় সুস্থিতি এসেছে বলতে পারো ? যুবকের কাছে এতো কিছু আশা করে কষ্ট বাড়িয়ো না রূপা। তার তো নিজের বলতে আর কিছুই রইলো না। এমন শূন্যবুকে সে কীইবা দিতে পারে ! তুমি যা দাও, এই অমূল্য সম্পদই তো সে দান করার ধৃষ্টতাপূর্ণ দুঃসাহস দেখায়। অনন্ত উদারতায় তুমি তা গ্রহণ করো বলেই এই মহান দুঃখে সে সুখী। জগতের সবচেয়ে সুখী পুরুষ !

‘...তোমাকে যা দিয়েছিনু, সে তোমারই দান ;
গ্রহণ করেছো যত ঋণী তত করেছো আমায়
হে বন্ধু...।’

-রবীন্দ্রনাথ।

চলবে...

আগের পর্ব (১৫):
পরের পর্ব (১৭):
R_d_B

No comments: