‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই। তা প্রকাশ করতে যদি লজ্জাবোধ হয়, তবে সে ধরনের চিন্তা না করাই বোধ হয় ভাল।’ -- প্রাচীন গ্রীক কবি ইউরিপিডিস (৪৮০-৪০৬ খ্রীঃ পূঃ)
Tuesday, May 27, 2008
# মায়াবী জলের খেলায়- ০৬ (কবিতাগুচ্ছ)
মায়াবী জলের খেলায়- ০৬ (কবিতাগুচ্ছ)
-রণদীপম বসু
দেহের অধিক কিছু
অদ্ভুত বাজির দর
মন দিলে মন পাবে- আরো আছে
সুলয়িত দেহলি ছাঁচের গড়া ত্রিভুজের ঘর
অদ্ভুত বাজির দর !
কেউ কেউ জিতে নেয় কেউ বা নাচার
জুয়ারি প্রেমিক যারা
অনায়াসে ধরে দান
কই গেলে সাঁই বাবা- ঘরে এসো
বেদখল হয়ে যায় তীর্থদেহ স্থান !
দর হাঁকে অসীম কান্তির পুরুষ, শব্দকল্পময় ;
নিজেকে চেনাতে হলে প্রেমিক বরণ
আছে কিছু পোড়া ছাই ?
ভস্মস্তুপ জুড়ে থাকা উজার ময়ান ?
তবে হাঁকো দর- সর্বস্ব খোয়ার মূল্যে
দেহের অধিক কিছু কি আছে ধরায়-
যা দেহাতীত নয় ?
(১৪/০৪/২০০৭)
শাশ্বত খাম
ভেতরে যখন অথৈ অন্ধকার নামে
তোমাকে কাছে টেনে আলো জ্বেলে নেই-
কলমটা ধরা আছে আমার হাতেই
বিন্যস্ত পাতায় তোমার অজস্র কবিতা লিখে
তুলে রাখি শাশ্বত খামে।
(১৬/১২/২০০৬)
লোকস্বর
অন্তর্গত ক্রোধ মানুষকে সাহসী করে
অন্তর্গত কান্না নিরন্তর শুদ্ধ করে
অশুদ্ধ প্রত্যয় দেয় অবিচ্ছিন্ন হাহাকার-
উল্লাস বলে ভুল করে লোকে।
মুখ থেকে ছিঁড়ে গেলে বিপণ্ন মুখোশ
কেউ কেউ হয়ে ওঠে হিংস্র দাঁতাল
তুখোড় মন্ত্রের জোরে কালক্ষেপণ শুধুই-
চতুর যে, শক্তির মন্ত্রণা শিখে।
কালজ্ঞ হতে চাই শেকড়ের শুদ্ধ বিশ্বাস
পরিত্যক্ত বীজে ধানে যে করে ফসল বিলাস
হাহাকার ছুঁবেই তাঁকে, লব্ধজ্ঞান
খনাকে দেয় লোকস্বর- অদৃশ্য আলোর বাথান !
(১৬/১২/২০০৬)
সমাপ্তির রেখা
প্রতিটা প্রারম্ভেই থাকে
নির্বেদ স্পষ্টতায় আঁকা সমাপ্তির রেখা
প্রারম্ভের চুম্বন-ঘোরে সমাপ্তি আরক্তিম এতোই
আশ্লেষে মিশে থাকা যমজ বিভেদ
পার্থক্য করে না কেউ অনর্থক।
তবু কেউ অকস্মাৎ চিনে গেলে
সেই সব শূন্যতার বেধ, যে যার নিজেই মতোই
নিমেষে হয়ে যায় যন্ত্রময় বিরল পথিক-
চলিষ্ণু রেখায় রেখায় অর্থহীন গন্তব্যসাধন
চেনাপথ হয়ে যায় চেনার অধিক
তারপর শূন্যতার দীর্ঘায়ণ শুধু।
প্রতিটা প্রারম্ভেই থাকে সমাপ্তির রেখো
চিনতে পারে না যে- নির্ঘাৎ সুখি থাকে সেই।
লৌকিক দৃষ্টির স্রোতে কিছু তার অর্থহীন নয়,
সমাপ্তি জানে না বলে
পুঞ্জিভূত নিমিত্তই গড়ে তোলে
আকাঙ্ক্ষার মগ্ন আয়োজন ।
(১৩/০৪/২০০৭)
পতাকা
কে ওরা হল্লা করে ? না কি উল্লাস ?
ভুলে গেছে তবে
সবুজ জমিনে আঁকা লাল বৃত্তটা শুধু
রশ্মিমান সূর্যই নয়
তারও আগে
ছোপ ছোপ রক্তের বিদীর্ণ চিৎকার-
অন্তর্গত কান্না দিয়ে যা মুছে দিতে হয়
নিরন্তর।
কাঁদতে জানে না যে তার কাছে
ওটা তো শুধুই শুধু
এক টুকরো বিমিশ্র কাপড় !
(১৬/১২/২০০৬)
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment