Sunday, December 27, 2009

| দুই-মেগাপিক্সেল…| মধুর কেন্টিন |



| দুই-মেগাপিক্সেল…| মধুর কেন্টিন |
- রণদীপম বসু


‘মধু দা’ ও ‘মধুর কেন্টিন’, বাঙালির স্বাধীনতা আন্দোলন-সংগ্রামের ইতিহাসে অবিচ্ছেদ্য একটি নাম। তারুণ্যের টগবগে উচ্ছ্বাস আর চেতনাকে ধারণ করে যে ছাত্র আন্দোলন জাতীয় রাজনীতি-সংগ্রামের ঝাণ্ডাটাকে শক্ত হাতে সাফল্যের স্বর্ণ-দুয়ারে পৌঁছে দিতে অগ্রবর্তী ভূমিকা রেখেছিলো, তার লালন ও বিকাশভূমি বাঙালির সংগ্রামী তীর্থ এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। তৎকালীন তুখোড় বিপ্লবী ছাত্র ও নেতৃবৃন্দ যারা পরবর্তীতে জাতিকে নেতৃত্ব দিয়ে এসেছে এবং এখনো দিচ্ছে, তাঁরা কেন যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছোট্ট অনাড়ম্বর একটা কেন্টিনকে সংগ্রামী চেতনার অঙ্কুরকেন্দ্র বানিয়ে তুলেছিলেন, সেটা নাহয় তাঁদের স্মৃতিকথা থেকেই আমরা জানবো। কিন্তু স্বাধীনতা সংগ্রামের চরম মুহূর্তে এসে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ২৫ মার্চ ১৯৭১ এর কালোরাত্রির প্রথম প্রহরে যে তাণ্ডব-যজ্ঞের মাধ্যমে বিশ্বের বৃহত্তম গণহত্যার সূচনা করেছিলো, তৎকালীন ছাত্র-শিক-কর্মচারীদের সাথে একজন ‘মধুসূদন দে’ নামের নিরীহ কেন্টিন পরিচালককেও যখন খুঁজে ধরে এনে হানাদার পশুরা নৃশংস কায়দায় হত্যা করে, তখন আর বুঝতে বাকী থাকে না সবাইকে ঋণী করে রাখা সবার প্রিয় ‘মধুদা’কে চিনে নিতে কেন শত্রুরাও ভুল করে নি।

১৬ ডিসেম্বর ২০০৯ বিজয় দিবসের মধ্যদুপুরে এক ফাঁকে ঢুঁ মারলাম মধুর কেন্টিনে। বেশ কিছুদিন আগেও আরেকবার যখন এসেছিলাম, তখনো কান-কথা শুনছিলাম যে, কারা নাকি এই ঐতিহ্যবাহী মধুর কেন্টিনের মলিন ভবনটা ভেঙে নতুন ভবন তৈরির পায়তারা করছে। ঐতিহ্য-ধ্বংসের এই চক্রান্ত কতোটা সত্যি জানি না। তবে সত্যিই যদি হারিয়ে যায়, সে আশঙ্কা বুকে নিয়ে গুটিকয় আলোক-স্মৃতি গেঁথে নিলাম দুই-মেগাপিক্সেলটায়।


চিত্র: ০১
মধুসূদন দে স্মৃতি-ভাস্কর্য। মধুর কেন্টিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।




চিত্র: ০২-০৬
মধুর কেন্টিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।







মধুদা’র জন্য অনেক অনেক শ্রদ্ধা রেখে যাই।

No comments: