Friday, August 6, 2010

| ঘড়ায়-ভরা উৎবচন…|১৮১-১৯০|

| ঘড়ায়-ভরা উৎবচন…|১৮১-১৯০|
রণদীপম বসু

(১৮১)
রোগশয্যায় মানুষ চক্ষুষ্মাণ হয়ে ওঠে;
তখনই সে নিজের দুর্বলতাগুলো দেখতে পায়।

(১৮২)
বিলাপ আর কৌতুকে কোন মৌলিক পার্থক্য নেই;
বিলাপ হলো নিজেকে সান্ত্বনা দেয়া,
কৌতুক হচ্ছে অপরকে সান্ত্বনা।

(১৮৩)
প্রেমের আশ্রয় নির্ভরতা, কিন্তু প্রেম নির্ভরতার আশ্রয় নয়।


(১৮৪)
উদ্যম হারালে মানুষ সম্ভাব্য মৃত্যুতারিখ খোঁজে।
প্রাণিজগতে কেবল মানুষই উদ্যমহীন হয়; এবং তাদের সান্ত্বনা হয়
ধর্ম নামের এক কাল্পনিক অলৌকিক জগত।

(১৮৫)
‘অনিবার্য গন্তব্যের কথা মনে এলে মন বিষণ্ন হয়,
মনে পড়ে অনেক কাজ এখনো বাকি।’-
এরকম চিন্তা বার্ধক্যে হতাশা আনে, যৌবনে জাগায় আশা।

(১৮৬)
মানুষ যখন নিশ্চুপ থাকে, তখনই সে ব্যক্ত হয় বেশি;
যখনই বকবক করে, আসলে সে নিজেকে আড়াল করে তখন।

(১৮৭)
বাঙালির হৃদয় বড় শক্ত জায়গা;
নিজেই নিজের হৃদয়ে বেশিদিন থাকতে পারে না।

(১৮৮)
চল্লিশ পেরোলে প্রায় সব পুরুষই মর্ষকামী যৌন-শয়তানে পরিণত হয়;
আর চল্লিশোত্তর নারীরা আক্রান্ত হয় ভয়ঙ্কর ঈর্ষাতুর হীনম্মণ্যতায়।

(১৮৯)
ভাবনার গতিপথেই আধুনিকতা নিহিত।
‘নলেজ ইজ পাওয়ার’ বা ‘জ্ঞানই শক্তি’ হচ্ছে সেকেলে ধারণা;
একালের নির্যাস হচ্ছে- ‘ক্ষমতাই সকল জ্ঞান’ বা ‘পাওয়ার ইজ নলেজ’।

(১৯০)
পুরনো কাপড় আর প্রয়াত স্বজনের মধ্যে বিশাল তফাৎ।
পুরনো কাপড়কে আমরা অবহেলায় তুলে রাখি অন্য কাজে ব্যবহার করতে;
প্রয়াত স্বজনকে সর্বোচ্চ সম্মানের সাথে পরিত্যাগ করি কবরে বা চিতায়।

No comments: