Friday, July 30, 2010

| ঘড়ায়-ভরা উৎবচন…|১৭১-১৮০|

| ঘড়ায়-ভরা উৎবচন…|১৭১-১৮০|
-রণদীপম বসু

(১৭১)
একটি সিংহকে পোশাক পরালে সে আর তেজোদ্দীপ্ত সিংহ থাকে না,
তার সৌন্দর্যেরও মৃত্যু ঘটে।
কিন্তু মানুষের কুশ্রীতা ঢাকতে পোশাকের দরকার হয়।

(১৭২)
অন্যের ব্যর্থতার সাপেক্ষে যে নিজের যোগ্যতার পরিমাপ করে, সে অযোগ্য।
সফল ব্যক্তি অন্যের যোগ্যতাকেই নিজস্ব তুলাদণ্ডে যাচাই করে নেয়।

(১৭৩)
প্রার্থণার নামে করুণা ভিক্ষা করে মেরুদণ্ডহীন অথর্বরা;
এরা ধর্মান্ধ ক্রিতদাস, নিঃস্ব।
মানুষের জন্যে পৃথিবীর জন্যে অন্ধতা ছাড়া এদের দেয়ার কিছু নেই।


(১৭৪)
ধর্মে নারীদেরকে কী কী দারুণ দারুণ অধিকার দেয়া হয়েছে
তা নিয়ে বিস্তৃত ব্যাখ্যা শোনা যায় তথাকথিত ধর্মগুরুদের রসতৃপ্ত বয়ানে।
কিন্তু পুরুষকে অনুকম্পা দেখিয়ে কী কী অধিকার দেয়া হয়েছে তা নিয়ে বলতে শুনি না।
গৃহের মালিক আর গৃহের উপকরণের মধ্যে এখানেই পার্থক্য।

(১৭৫)
মানুষ হচ্ছে একটা হারানো অস্তিত্ব,
সারাজীবন নিজেকেই খুঁজে ফেরে শুধু।

(১৭৬)
‘শ্লীল’ শব্দটিই একমাত্র অশ্লীল শব্দ
যা কেবলই অশ্লীলতা ছড়ায়।

(১৭৭)
ঘুষি খেলে মানুষ আঘাতপ্রাপ্ত হয়,
থাপ্পড় খেলে হয় অপমানিত।

(১৭৮)
গল্প একটা ঘটনা, কিন্তু ঘটনা গল্প নয়।
মানুষ গল্প হয়, কিন্তু গল্পের মতো চলে না।

(১৭৯)
নিকৃষ্ট বস্তুর সাথে তুলনা করলেও মানুষ ততটা অপমান বোধ করে না
যতটা বোধ করে ইতর প্রাণীর নামে আখ্যায়িত করলে;
কারণ কল্পনা তাকে সেখানে পৌঁছে দেয়।

(১৮০)
সাবালককে যে নাবালক ভাবে সে নাবালক,
নাবালক যে সাবালক মনে করে সেও নাবালক।


No comments: