Friday, December 18, 2009

| দুই-মেগাপিক্সেল…| রোড-টু-সিলেট-০২ |



| দুই-মেগাপিক্সেল…| রোড-টু-সিলেট-০২ |
- রণদীপম বসু


রোড-টু-সিলেট: পর্ব-[০১][*][০৩][০৪]

১২.
ভৈরব ব্রীজের বুক বেয়ে প্রশস্ত মেঘনা পেরুচ্ছি। শা শা করে ছুটে চলা গাড়ির জানলা দিয়ে দুই মেগা-পিক্সেলটা তাক করলাম খাঁ খাঁ শূন্যতার মতো প্রশস্ত মেঘনার বুকে গজিয়ে উঠা চরটার দিকে। এপার ভৈরব, ওপার আশুগঞ্জ। এপার নরসিংদী জেলা কিংবা হালে হতে যাওয়া জেলা ভৈরব, ওপার ব্রাহ্মণবাড়িয়া।



১৩.
আশুগঞ্জ বাজারটা পেরিয়েই একটা হাইওয়ে ইন বা সরাইখানা ‘উজান ভাটি’। জীবনের গতিপথে থেমে থেমে চলি তো কতোই ! সিলেটের পথে না হয় বিশ মিনিটের একটা যাত্রাবিরতি নিলাম এখানে। ফ্রেশ হওয়ার জন্য নেমে পড়লাম। এবং তার সাথে একটা ক্লিক।


১৪.
নদীর কি ভিন্ন ভিন্ন চেহারা থাকে ? আসলে পাড় দেখেই নদী চিনি আমরা। পাড় না চিনলে নদীও চিনি না। যাকে বিখ্যাত বানিয়ে অদ্বৈত মল্লবর্মণ লিখেছিলেন ‘তিতাস একটি নদীর নাম’, তিতাস সেতুর বুক থেকে ক্যামেরায় আটকে যাওয়া এই নদীটাই সেই তিতাস।


১৫.
চলন্ত বাস থেকে কোন সেতুর ছবি নেয়া দুরুহ। ব্রীজ থেকে নেমে রাস্তাটা এভাবে প্রায় সমকোণে বাঁক নিয়েছিলো বলেই পেছনে পড়ে থাকা তিতাস সেতুটাও ক্যামেরা থেকে ছুটে যায় নি।


১৬.
এই হচ্ছে আমার রূপসী বাংলা; শান্ত, স্থির, মন কেড়ে নেয়া যার রূপ ! বেশ ভালো গতিতে ছুটে চলা বাসের জানালা থেকে দুই-মেগাপিক্সেলে ধারণ করা। এমনি এমনি ক্লিক করা। এ থেকে একেবারেই আশা করিনি কিছু। কিন্তু মায়াবি প্রকৃতি বঞ্চনা করেনি একটুও।


১৭.
যে দিকে চোখ যায় মাঠের পর মাঠ পাকা ধান। আহা, নগর সভ্যতায় বিলীন হয়ে কতোকাল দেখি না এই দৃশ্য ! গাছগুলো যে শুয়ে পড়তে চাচ্ছে, এতে গাছের কোন দোষ নেই। গাড়ির গতি আর আলোর প্রতিসরণের গাণিতিক কারসাজি হয়তো।


১৮.
ঢাকা মহানগরীর কোথাও পুকুর দেখি না। আর কাক-চক্ষু জল সে তো স্বপ্লেরও অগম্য ওখানে। কিন্তু এইটা দেখুন, যেন পুকুর নয়, রূপসী বাংলা তাঁর আঁচল বিছিয়ে রেখেছে পরম মমতায়।


১৯.
লেবেল ক্রসিং-এর এই ছবিটাই বলে দেয়, সন্ধ্যা যত ঘনিয়ে আসছে দুই-মেগাপিক্সেলের চোখও কানা হয়ে আসছে। অর্থাৎ এদিনের মতো তাকে বিশ্রামে পাঠানো দরকার।



সিলেট আর বেশি দেরি নয়। সন্ধ্যের পরপরই পৌঁছে যাবো হয়তো।…

(চলমান…)

No comments: