Saturday, December 19, 2009

| দুই-মেগাপিক্সেল…| রোড-টু-সিলেট-০৩ |



| দুই-মেগাপিক্সেল…| রোড-টু-সিলেট-০৩ |
- রণদীপম বসু


রোড-টু-সিলেট: পর্ব-[০১][০২][*][০৪]

বিকেলে একটা ঘরোয়া অনুষ্ঠানে যোগদান করতেই গতরাতে (০৪-১২-২০০৯) সিলেট পৌঁছা। রাতেই আবার ফিরতে হবে ঢাকায়। সকালে ঘুম ভেঙেই ভাবলাম তারুণ্যের বহু স্মৃতিমাখানো এই সিলেট শহরটায় একটা ছোটখাটো চক্কর দিয়ে আসি। বেরোতে বেরোতে এগারোটা পেরিয়ে গেছে। পকেটে দুই-মেগাপিক্সেল। প্রকৃত ছবিয়ালদের জন্য গোটা সিলেট এক বিস্ময়কর রত্নভাণ্ডার। আমি ছবিয়াল নই, এবং বাউণ্ডুলে আমার হাতে মাত্র তিনটা ঘণ্টা সর্বোচ্চ বরাদ্দ। কিন্তু যেখানেই দুই-মেগাপিক্সেল তাক করি, সূর্য হঠাৎ তার জ্বলন্ত দৃষ্টি নিয়ে ঠিক মুখোমুখি হয়ে যায়। ক্ষুধার্ত জিহ্বায় মশকারির ছাই আর কি !

২০.
বিভাগীয় শহর সিলেটের অন্যতম ল্যান্ডমার্ক হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী কীন-ব্রীজ। সিলেটের কবি দিলওয়ার-এর একটা কাব্যগ্রন্থের নাম সেই ছাত্রজীবনে আমাদের মুখে মুখে ফিরতো- ‘কীন ব্রীজে সুর্যোদয়’। শহরটিকে দুটো অসম ভাগে ভাগ করে রাখা ভাবুক নদী সুরমা’র এপার-ওপার এক-করে দেয়া আরো নতুন ব্রীজ তৈরি হলেও সিলেটবাসীর জন্য এই বয়োবৃদ্ধ কীন-ব্রীজ ছাড়া সিলেট শহর কল্পনা কি স্বপ্নেও সম্ভব !



২১.
কীন-ব্রীজের গোড়ায় সুরমার পাড় ঘেষে তৈরি ধাতব এই শিল্পকর্মটির নাম ‘ড্যান্সিং সার্কল’। এটা ছাড়া আর কোন শিল্পকর্ম বা সড়ক-ভাস্কর্য সিলেট নগরীর কোথাও নির্মিত হয়েছে কিনা আমার জানা নেই।





২২.
সিলেট সার্কিট হাউস। কীন-ব্রীজের পাশে সুরমা’র পাড়ে এই সুরম্য ভবনটি সত্যিই দৃষ্টিনন্দন।



২৩.
কীন-ব্রীজের উপর থেকে দুই-মেগাপিক্সেলের চোখে সিলেট সার্কিট হাউস এলাকাটাকে দেখতে মন্দ লাগছে না !



২৪.
কীন-ব্রীজের বুক থেকে শিতের নিরিবিলি নদী সুরমা’র চলে যাওয়ার দৃশ্যটায় চোখ রাখলে ভেতরে কেমন একটা উদাস উদাস ভাব চলে আসে !



২৫.
কীন-ব্রীজের যে-পাশে সার্কিট হাউস, তার অপর-পাশে সিলেটের আরেকটা ছোট্ট ও ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা হলো ‘আলী আমজাদের ঘড়ি’। সংস্কার-কাজ চলছে বলে এ-মুহূর্তে মুল ঘড়ির অবস্থানটিতে এপাশ-ওপাশ একটা সুড়ঙ্গই চোখে পড়ে, ঘড়িটি নেই।



২৬-২৭.
আলী আমজাদের ঘড়ি ছুঁয়ে সুরমার পাড় ঘেষে চলে যাওয়া রাস্তা এবং সংলগ্ন পার্ক-মতন জায়গাটা কীন-ব্রীজের উপর থেকে মন-কেমন-করা ভালো-লাগায় আটকে থাকে। ঘড়ি-স্থাপনার পাশেই রয়েছে সিলেটের আরেক ঐতিহ্য ‘সারদা হল’।

.


২৮-২৯.
‘ড্যান্সিং সার্কেল’-এর ফাঁক-ফোকড় দিয়ে দৃষ্টি চারিয়ে দিলেও খুব একটা মন্দ লাগেনা দেখি !

.


৩০.
কিছু কিছু জায়গার চলমান পরিবর্তনগুলোকে পরিবর্তন বলে মনে হতে চায় না। হয়তো পাশাপাশি পুরনো স্থাপনাগুলো থেকে যাওয়ার জন্যেই। যেমন সিলেটের জিন্দাবাজার। দীর্ঘ নিঃশ্বাস টেনে পুরনো ঘ্রাণটাকে অনুভব করার চেষ্টা করি।



৩১.
সিলেট চৌহাট্টার ঠিক আগেই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার। বিভাগীয় শররের ক্রমপ্রসারমান একটা বিপুল জনগোষ্ঠির আগ্রহের তুলনায় শহীদ মিনার এলাকার এতো ছোট্ট ও স্বল্প-পরিসরতা বিশাল এক অতৃপ্তিকেই ধারণ করে রাখে।



৩২.
শহীদ মিনারের ঠিক লাগোয়া পেছনের পল্লবিত সবুজ গাছটার দিকে অনেকক্ষণ চেয়ে থাকতে ইচ্ছে করে। বাংলাদেশের কী চমৎকার একটা সবুজ প্রাকৃতিক মানচিত্র হয়ে সেটে আছে মিনারের গায় !



৩৩.
সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের স্থাপনায় ছায়াঘন সবুজের আধিক্য চোখে ও মনে একটা সুশীতল অনুভূতি বুলিয়ে যায়।



৩৪.
সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রতিষ্ঠা ফলক।



৩৫.
শহীদ মিনারের সামনে রাস্তার অপর পার্শ্বে অবস্থিত সিলেট চা বোর্ড ভবন।



৩৬.
রিকাবী বাজার চৌরাস্তায় সড়ক-দ্বীপ, পোস্টারের কবলে নাজেহাল। পোস্টার-সন্ত্রাসীরা বুঝে না শিল্পের কদর।



৩৭.
রিকাবী বাজার চৌরাস্তার সড়ক-দ্বীপে স্থাপিত শৈল্পিক-ফলক, যেখানে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘বিদ্রোহী’ কবিতার আংশিক উৎকীর্ণ রয়েছে।



৩৮.
রিকাবী বাজারে অবস্থিত সিলেট স্টেডিয়াম সংলগ্ন ক্রীড়া ভবন কিংবা স্টেডিয়ামের প্রধান প্রবেশপথ।



৩৯.
সিলেট ক্রীড়া ভবনের গেটের পাশেই একটা মাজার। মাজারের পাশে সিলেট অডিটরিয়ামের একাংশ দেখা যায়। অলি-আউলিয়াদের চরণ-স্পর্শে ধন্য সিলেটের গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে এরকম মাজার থাকলেও কোথাও কি কোন শিল্প-কর্ম বা সড়ক-ভাস্কর্য চোখে পড়ে কারো ?



৪০.
শহীদ ডাঃ সামসুদ্দিন আহমদ ছাত্রাবাস ঠিক তেমনি আছে, বাউন্ডারি-ওয়ালটি বাদে। বহু বছর আগে যেমনটি দেখেছি।



৪১.
শহীদ ডাঃ সামসুদ্দিন আহমদ ছাত্রাবাসের সামনে রাস্তার ঠিক উল্টোপার্শ্বের স্মৃতিটা কেমন পাল্টে গেছে। সম্ভবত এখানেই একদিন অন্যরকম এক ‘প্রান্তিক’ ছিলো। জায়গাটা কি স্মৃতি-ভারাক্রান্ত !


৪২.
সিলেট পুলিশ লাইন, রিকাবী বাজার।


৪৩.
সিলেট মদন মোহন কলেজ। আগের দেখা স্মৃতির সাথে এর বহিরঙ্গ আরো উজ্জ্বল ও আকর্ষণীয় হয়ে ওঠেছে।



(চলমান…)

No comments: