| ঘড়ায়-ভরা উৎবচন...|১৫১-১৬০|
রণদীপম বসু
...
(১৫১)
অসার জিহ্বা ভাষাকে মুক্ত করতে অক্ষম বলেই
বোবার চোখ ভাষার রুদ্ধতাকে বাঙ্ময় করে তোলে।
(১৫২)
খ্যাতি ও ক্ষমতা কুড়ানোর চতুর পদ্ধতি হলো পুরস্কার দেয়া।
পুরস্কার পেতে হয়তো ন্যূনতম যোগ্যতা থাকতে হয়,
পুরস্কার দেয়ার জন্য কোন যোগ্যতার দরকার হয় না।
পুরস্কার বারবার পাওয়া যায় না, কিন্তু বারবার দেয়া যায়।
(১৫৩)
যোগ্যতা অর্জনের আগেই কোনকিছু দ্রুত পাওয়ার ইচ্ছা মানুষকে অপরাধপ্রবণ করে তোলে।
আর খ্যাতির লিপ্সায় অপরাধপ্রবণ মানুষ সুকুমার বৃত্তি হারিয়ে শেষপর্যন্ত নিঃস্ব হয়ে যায়।
এজন্যেই শিল্প-সাহিত্যের অঙ্গনে নিঃস্ব মানুষের আনাগোনা বেশি হয়ে থাকে।
(১৫৪)
শর্তহীন আনুগত্য মেরুদণ্ডহীনতা, তবে মেরুদণ্ডধারী মানে অবিশ্বস্ত নয়।
ব্যক্তিত্বহীন লোক হয় অনুগত ; ব্যক্তিত্ববান থাকে বিশ্বস্ত।
(১৫৫)
ঘটনা একটা বিষয়, কিন্তু বিষয় কোন ঘটনা নয়।
যোগ্য ব্যক্তির পুরস্কৃত হওয়া কোনো বিষয় নয়, না-হওয়াটাই বিষয়;
আর অযোগ্য লোকের পুরস্কার না-পাওয়া কোনো বিষয় নয়, পাওয়াটাই ঘটনা।
(১৫৬)
অযোগ্যের দেয়া পুরস্কার যোগ্য-ব্যক্তিকে অপমান করে;
পুরস্কার প্রত্যাক্ষাণের যোগ্যতা যোগ্যকে যোগ্যতম করে তোলে।
(১৫৭)
যে রচনা নতুন কোনো প্রশ্নকে আমন্ত্রণ জানায় না
তা বড়জোর নিবন্ধ হতে পারে, প্রবন্ধ নয়।
(১৫৮)
কবিতায় রসের খোঁজ পায় তারা, যারা তার অর্থ বুঝতে উঠেপড়ে লাগে না,
শুধু উপলব্ধি জাগিয়ে তোলে।
আর কবিতার ম্যাজিকটা বুঝে ফেলে তারাই যারা এর অর্থহীনতা আবিষ্কার করে।
দুর্ভাগা মানুষের কাছে কবিতা অর্থহীন।
(১৫৯)
দার্শনিকতার সাথে পাণ্ডিত্যের কোনো সম্পর্ক নেই;
শিশুর মতো প্রশ্ন আর কৌতুহলের কলগুঞ্জনই দার্শনিকতা।
দার্শনিক যেখানে অনায়াসে শিশু হয়ে যান, পণ্ডিত সেখানে অক্ষম।
(১৬০)
ভুল করে যে ভুল করে, সে হৃদয়বান; সংশোধন তার আয়ত্তেই থাকে।
যে ভুল করে না কখনো, সে হৃদয়হীন; সংশোধনের অযোগ্য।
...
...
No comments:
Post a Comment