Saturday, March 6, 2010

| যে ডায়েরীটা লেখা হবে না আর...|২৯|


| যে ডায়েরীটা লেখা হবে না আর...|২৯|
-রণদীপম বসু
...
তারিখ: নেই (অনুমান এপ্রিল, ১৯৯৩)
...
কী সুন্দর অনাচার ! জন্ম নেয়াটা তবে কি সারাটা জীবনের এক অদ্ভুত উদ্ভ্রান্তি নিয়ে নিরবচ্ছিন্ন বয়ে চলা ? অনর্থক একটা মৃত্যুর মাঝে যার অনিচ্ছুক সমাপ্তি !
এর কোন উত্তর হয় না রূপা। তুমি যার জীবনে এলে মঙ্গলদীপ হয়ে, তার কাছে জীবনের কিছুই তো আর অনর্থক হতে পারে না। প্রতিশ্রুতিহীন জীবনের বোঝার অনাচার হয়তো অপেক্ষা করে যেনতেন কোন সমাপ্তির। কিন্তু একটি চিরন্তন নারী আর একটি চিরায়ত পুরুষের মহামিলনের প্রতিশ্রুতি মৃত্যুর অনিবার্য পরিসমাপ্তিকেও অর্থবহ করে তোলে বলে একের জন্ম কোন অকস্মাৎ ঘটনা নয়, সেটা যুগলের আগমনী প্রতিক্ষা মাত্র। তাই জন্মমাত্র আমার নিয়তি অনিবার্য করেছিলো তোমর জন্ম নেয়াকে। আমাকে নিয়তিবাদী বলে ভেবো না যেনো। আমি নিয়তিবাদী নই। অদৃষ্টকেই আমরা নিয়তি বলে ডাকি। অদৃষ্ট মানে যা দৃষ্ট নয়। অর্থাৎ এর পর কী হবে যা জানা যায় না। আমার জন্ম যেমন বিকল্পহীন সত্য, তেমনি তোমার জন্মও অনিবার্য সত্য- একে অন্যের জন্য, এটাই বলতে চাচ্ছি।



এ পৃথিবীতে তোমার জন্ম হয়নি বা কোন কালেও তোমার অস্তিত্ব ছিলো না, অথচ আমি আছি, হয়তো কাউকে ভালোবাসি, এমনটা কি ভাবা যায় বলো ! এমনও তো হতে পারে, তোমার জন্ম হবে বলেই আমার জন্ম হয়েছে আগে, নয়তো তা হতো না। তোমার আমার জন্ম না হয়ে অন্য কোন যুগলের জন্ম হতো, কী অদ্ভুত ব্যাপার, তাই না রূপা ! যেহেতু আমরা জন্মেছি দু’জন শুধু আমাদের জন্যই একান্ত আপনার হয়ে নিয়তির ছলে, তাই আমরাই আমাদের নিয়তি, কী বলো ? নিয়তির কাজ শেষ জন্ম দিয়েই। ওখানে আমাদের হাত ছিলো না বলেই নিয়তির কাছে ঋণী হয়ে রইলাম। বাকিটুকু চলোনা সাজাই দু’জনে একান্ত আপন মনে ! নিয়তিকেই ঋণী করে শোধ করি নিয়তির ঋণ !
...
(চলবে...)
...
পর্ব:[২৮] [*] [৩০]
...

No comments: